এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
এই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে মুঠোফোন চেক করে ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘনের অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের (সিএসই) শিক্ষার্থী আবির হাসান। আজ সোমবার দুপুরের দিকে প্রক্টর অফিসে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন তিনি।
আবির হাসান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে উমামা ফাতেমার নেতৃত্বাধীন স্বতন্ত্র শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেলের সদস্য প্রার্থী ছিলেন। তিনি সিএসইর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র।
এ বিষয়ে প্রক্টর সাইফুদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরা ফোন চেক করেছেন, এমন অভিযোগ করেছেন আবির। তাঁরা ফোন চেক করতে পারেন কি না এবং এর প্রতিকার চেয়ে আবেদন করেছেন তিনি।
প্রক্টর আরও বলেন, ‘এটি সত্য কি না, কোন পর্যায়ে হয়েছে, কেন করা হয়েছে, তাঁর সম্মতি ছিল কি না—এসব যাচাই করতে আমি একটি তথ্য অনুসন্ধান কমিটি গঠন করেছি। সেই কমিটিতে দুজন সহকারী প্রক্টর আছেন, পাশাপাশি অভিযোগকারীর প্রতিনিধি হিসেবে একজন ছাত্র প্রতিনিধি রাখা হয়েছে।’
ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে অভিযোগকারী শিক্ষার্থী আবির হাসান মঙ্গলবার প্রথম আলোকে জানান, তিনি ও তাঁর এক বন্ধু শনিবার রাত পৌনে আটটার দিকে মোটরসাইকেলে করে শাহবাগ থেকে ক্যাম্পাসের দিকে আসছিলেন। বহিরাগত যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করায় শাহবাগ মোড় থেকে থানার সামনে আসতে তাঁদের ২০ মিনিটের মতো লেগে যায়।
এতে ক্ষুব্ধ হন জানিয়ে আবির হাসান বলেন, ‘আমি ঢোকার সময় প্রক্টরিয়াল মোবাইল টিমের একজন সদস্যকে বলি, এই যে আপনারা রাস্তাঘাট বন্ধ করে মানুষজনের দুর্ভোগ সৃষ্টি করেন, কয়েক দিন পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাম শুনলে তো লোকজন থুতু ফেলবে। সে আমাকে বলে আপনি কি ক্যাম্পাসের? আইডি কার্ড দেখান। দেখাইলাম, তখন সে আইডি কার্ড হাতে নিতে চাইছে। আমি বলছি, হাতে আইডি কার্ড দেব না। আমি হল কার্ডও দেখাইছি। এমন সময় প্রক্টরিয়াল টিমের আরেক সদস্য পাশেই এক রিকশাওয়ালার সঙ্গে ঝামেলায় জড়ান এবং রিকশাওয়ালাকে চড় মারেন। আমি মোটরসাইকেলে থাকা অবস্থায় বলি যে তাঁরে মারলেন কেন আপনারা? আমি যে সদস্যের সঙ্গে তর্কে জড়িয়েছিলাম, তিনি বলেন প্রক্টর স্যার আসবেন, আপনি কথা বলবেন তাঁর সঙ্গে।’
আবির জানান, রিকশাওয়ালার সঙ্গে কথা–কাটাকাটির একপর্যায়ে রিকশাওয়ালা এসে প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যের সঙ্গে মারামারিতে জড়ান। দুজনই জখম হন। একপর্যায়ে মারামারি থামে। তখন ডাকসুর সমাজসেবা সম্পাদক আসেন। এরপর রিকশাওয়ালা ও তাঁদের দুজনকে প্রক্টরের রুমে নিয়ে আসা হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘প্রক্টরের রুমে আসার পরে প্রথম যে ধাক্কাটা আমি খাই, সেটা হইল, টিমের সেই সদস্য প্রথমেই বলেন যে আমি, আমার বন্ধু এবং রিকশাওয়ালা মিলে তাঁকে মেরেছি, আমি তাঁর জামার কলার ধরেছি। আমি এতটাই শকড হয়ে গেছিলাম যে বলার মতো কোনো ভাষা পাচ্ছিলাম না। আল্লাহর কসম, আমি কোনোভাবেই তাঁর গায়ে হাত তুলি নাই। বরং তাদেরকে বাঁচাইতে গিয়ে আমার হাত কেটে গেছে।
‘প্রক্টর স্যারের উপস্থিত ব্যক্তিরা ঘটনা শুনলেন। তাঁদের কথা, তোমার তো ইন্টেনশনই খারাপ, ঢাবিকে গালি দিচ্ছ, তোমার সামনে একজন এমপ্লয়িকে মারল, এইটা তো লজ্জার। একজন সহকারী প্রক্টর বললেন, তুমি কোনো দলটল করো? ফোন দাও তোমার। আমার ফোন নিয়ে নেওয়া হয়, একজন সহকারী প্রক্টর আধা ঘণ্টা ধরে আমার ফোন চেক করেন। আমি এ ধরনের কোনো কাজ করব না ভবিষ্যতে এবং প্রক্টরিয়াল বডি আমার অপরাধের যে শাস্তি দেবে, সেটা মানতে বাধ্য থাকব—এই মর্মে মুচলেকা লিখতে দেওয়া হয়। আমি এতটাই প্যানিকড (আতঙ্কিত) ছিলাম যে আমার জাস্ট ওখান থেকে বের হইতে মন চাইতেছিল।’
আবির হাসান বলেন, ‘আমার বিশ্ববিদ্যালয়েরই দুজন সহকারী প্রক্টর (শিক্ষক) আধা ঘণ্টা ধরে আমার ফোন চেক করেছেন। কাউকে উলঙ্গ করা আর ফোন চেক করা একই কথা। এটি স্পষ্টভাবে আইনের লঙ্ঘন। যে দুজন আমার ফোন চেক করেছেন...তাঁরা যদি ভুল স্বীকার করে বিবৃতি না দেন, তাহলে দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী আমি তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
আবির হাসান আরও বলেন, ‘আমার কোনো সংগঠন নেই, কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ও নেই। আমি একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে গোপনীয়তার অধিকারের সুরক্ষা চাই।’
সংশোধনী: এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ২৭ অক্টোবর ২০২৫ রাত ১১টা ৫৫ মিনিটে। সেখানে অভিযোগকারী আবির হাসানের বরাত দিয়ে বলা হয়েছিল, গত শনিবার রাতে শাহবাগ চেকপোস্ট দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশের সময় তাঁর মুঠোফোন তল্লাশি করা হয়। তিনি এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য দেওয়ায় আজ ২৮ অক্টোবর, ২০২৫ রাত ১১টা ৩৬ মিনিটে প্রতিবেদনের ওই অংশ পরিবর্তন করা হলো।
Like
Dislike
Love
Angry
Sad
Funny
Wow
সিলেট-৩ দক্ষিণ সুরমায় বিএনপির গণসমাবেশ, কাইয়ুম চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণার দাবি
October 28, 2025
Comments 0